,

রাত পোহালেই দুর্গোৎসব, কাশিয়ানীতে প্রস্তুত ২২৬ মন্ডপ

লিয়াকত হোসেন লিংকন: মহালয়ার মাধ্যমে পুজোর ঢাকে কাঠি পড়ে গেছে। রাত পোহালেই সারাদেশের ন্যায় কাশিয়ানী উপজেলার সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ মেতে উঠবে আনন্দে। ঢাকের বাজনা, উলুধ্বনি ও আরতিতে মুখরিত হবে প্রতিটি মন্দির প্রাঙ্গণ।

কাশিয়ানী উপজেলায় ২২৬টি মন্ডপে ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে দুর্গোৎসব উদযাপনের যাবতীয় প্রস্তুতি। দুর্গোৎসবকে বর্ণিল করতে প্রতি বছরের মত এবারও চলছে নানা আয়োজন। উৎসবের সাজে সেজেছে প্রতিটি পূজা মন্ডপগুলো। রকমারি আলোকসজ্জা ও বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে মন্ডপ অঙ্গন। স্থাপিত হয়েছে রঙিন সব ফটক, ভেতরে মনোমুগ্ধকর সাজসজ্জা। রাতের জন্য থাকছে বাহারি আলোকসজ্জা।

প্রতিমা তৈরীর কারিগরেরা দেবী দুর্গা, তার সাথে বিদ্যার দেবী সরস্বতী, ধন সম্পদের দেবী লক্ষ্মী এবং তার সাথে দেবতা কার্তিক, গনেশসহ নানা দেব-দেবীর প্রতিমার রূপকে ফুঁটিয়ে তুলছেন নিপুন হাতের ছোঁয়ায়। তবে এখনও দূর্গাপুজার কেনাকাটা শুরু হয়নি।

কাশিয়ানী বাজার সার্বজনীন মন্দিরের পূজা কমিটির সভাপতি বিশ^জিত রায় বলেন, প্রতি বছরই মহা সাড়ম্বরে আমরা মায়ের পূজা করে থাকি। এই বছরও এর ব্যতিক্রম নয়। অন্যান্য পূজা মন্ডপের মতো এখানেও অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠীর দিন মায়ের পূজা শুরুহবে।

তিনি জানান, পূজায় ভক্তদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে আমাদের সব সময় যোগাযোগ রয়েছে। আশা করছি কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শেষ হবে দুর্গোৎসব।

এদিকে, দুর্গোৎসবকে ঘিরে জমে উঠেছে কেনাকাটা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কেনাকাটায় মুখর ফ্যাশন হাউজ ও মার্কেটগুলো। পূজা উপলক্ষে উপজেলার প্রতিটি মার্কেট ও বিপণী বিতানে লাল-সাদার সালোয়ার-কামিজসহ বিভিন্ন উজ্জ্বল রঙের পোশাক রয়েছে। আরো আছে সালোয়ার-কামিজের শাড়ি, ফতুয়া ও উজ্জ্বল রঙের ওড়না। ছেলেদের জন্যে এসেছে বাহারি সব ডিজাইনের ধুতি ও শর্ট পাঞ্জাবি।

উপজেলার সদরের হাজী মার্কেট, দত্ত মার্কেট, ঐশী বস্ত্রালয়, বিনোদ মার্কেট, খান সেন্টার, সিকদার মার্কেটসহ বিভিন্ন বিপনীবিতান ও শপিংমল ঘুরে দেখা গেছে, সনাতনী পরিবারের লোকজন পূজার কেনাকাটার জন্যে এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে যাচ্ছেন আর পছন্দ অনুযায়ী কেনাকাটা করছেন।

ক্রেতা সমাপ্তি রায় বলেন, পূজার শাড়ি মানেই লাল পাড়ে সাদা শাড়ি। মা দুর্গাকে বরণ করতে লাল-সাদার সনাতনী সাজ অবশ্যই থাকবে। তাই দুটা জামাদানি আর কাতান শাড়ি কিনেছেন।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এবার পূজায় বাচ্চাদের ফ্লোর টাচ ও মোদি কটির চাহিদা রয়েছে। ক্রেতারা আরো খুঁজছেন জামদানি ও সিল্কের শাড়ি। সমান তালে মেয়েরা ভিড় করছেন শাঁখা-সিঁদুরের দোকানে।

এবার শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাজারে এসেছে এপেক্স, বাটা, ওরিনসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নতুন নতুন ডিজাইনের জুতো। শারদোৎসবের পোশাকে লাল শক্তির আর সাদা শুভ্রতার প্রতীক হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে আসছে।

কাশিয়ানী সদরের বস্ত্র ব্যবসায়ী পলাশ দত্ত জানান, এবার পূজায় শাড়ি, প্রী পিচ ও কাটা থ্রী-পিচ বিক্রি ভালই হচ্ছে। জামদানি, বালুচুরী ও কাতান শাড়ির চাহিদা বেশি।

কাশিয়ানী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমান বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উদযাপন ও যে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য প্রতিটি মন্দিরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশের পাশাপাশি মন্দির পরিচালনা কমিটির স্বেচ্ছাসেবক কর্মী সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে।

এই বিভাগের আরও খবর